Jalpaiguri: সেই আতঙ্কের রাত, জানলার ওপারেই গুলি চলছে,নেপাল থেকে কীভাবে প্রাণে বেঁচে ফিরলেন জলপাইগুড়ির গবেষক ময়ূখ?

জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সেমিনারে গিয়ে নেপালে আটকে থাকা জলপাইগুড়ির গবেষক ময়ূখ ভট্টাচার্য বাড়ি ফিরলেন।

জলপাইগুড়ি, সুরজিৎ দে: নেপাল থেকে ফিরে এলেন জলপাইগুড়ির গবেষক ময়ূখ!  চোখের সামনে গুলি-বোমার বিভীষিকা! চোখের সামনে গুলি চলতে দেখার অভিজ্ঞতা কোনও সাধারণ মানুষের জীবনে সহজে আসে না। সেই হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা নিয়েই নেপাল থেকে বাড়ি ফিরলেন জলপাইগুড়ির গোমস্তাপাড়ার বাসিন্দা ও গবেষক ময়ূখ ভট্টাচার্য।

আন্তর্জাতিক জলবায়ু সংক্রান্ত এক সেমিনারে যোগ দিতে নেপাল গিয়েছিলেন ময়ূখ। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, সেমিনারের মাঝপথেই নেপালের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অস্থিরতায় হঠাৎ করেই চারদিক জুড়ে গুলির শব্দ, রাস্তায় সেনা টহল, আতঙ্কে থমথমে পরিবেশ। কার্যত হোটেলে বন্দি হয়ে পড়েছিলেন ময়ূখ ও তাঁর সহযাত্রী গবেষকরা। মোবাইলের ভিডিও কলেই পরিবারকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বাস্তব ছিল ভয়ঙ্কর। ময়ূখের কথায়, ” হোটেলের কাচের জানালার ওপারেই একের পর এক গুলি চলছিল। কানে ঝাঁঝালো শব্দ, বুক কেঁপে উঠছিল। খাবার জোগাড় করতেও সমস্যা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, আর হয়তো ফেরা হবে না।” শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর নিরাপত্তার বেষ্টনীতে তাঁরা সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছন। প্লেনের টিকিটের আকাশছোঁয়া দাম!  বাধ্য হয়েই সড়কপথে বিহার সীমান্ত হয়ে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসেন ময়ূখ।

আতঙ্কের মুহূর্তের পর গতকাল নিজের বাড়ি গোমস্তাপাড়ায় ফিরতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন পরিবারের সদস্যরা। ময়ূখের বাবা জানান, প্রতিটি রাত তাঁদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে। ”ছেলেকে সুস্থভাবে ফিরে পেয়েছি, এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি”… চোখে জল নিয়ে বললেন তিনি। নেপালের বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসে যেন নতুন জীবনের স্বাদ পেলেন গবেষক ময়ূখ। কিন্তু সেই গুলির শব্দ, আতঙ্কে ভরা রাতগুলো আজীবন তাঁর মনে গেঁথে থাকবে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *